বিশেষ প্রতিবেদন : রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৪০ বছরের পুরনো শিমুলিয়া গরুর হাট পুনরায় চালুর দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। বুধবার বিকেলে মুড়াপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী, খামারি ও হাট-সংশ্লিষ্ট শ্রমিক অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিমুলিয়া গরুর হাটে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে স্থানীয়রা গরু-ছাগল বিক্রি করে আসছেন। এই হাটের সঙ্গে এলাকার শত শত মানুষের জীবিকা জড়িত। হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান নষ্ট হয়েছে।
তারা আরও বলেন, এই হাট শুধু পশু বিক্রির স্থান নয়—এটি ছিল স্থানীয় অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। এখান থেকে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ও নিয়মিত আয় পেত। কিন্তু হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের আয়ও বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দুই মাস আগে হাটটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে হাটের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া রাজউক কর্তৃক উচ্ছেদ অভিযান শুরু হওয়ায় হাটের কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এসব কারণে উপজেলা প্রশাসন হাটটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসার কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। তাছাড়া হাটটি নিয়ে কয়েকটি পক্ষের বিরোধও তৈরি হয়েছিল। পাশাপাশি রাজউকের উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে হাটটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাটের সঙ্গে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। তাই আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বজায় রেখে পরিকল্পিতভাবে হাটটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বিএনপির নেতা জসিম উদ্দিন বলেন, প্রায় চার দশক আগে স্থানীয় সমাজসেবক ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ সংলগ্ন এলাকায় শিমুলিয়া গরুর হাট চালু হয়। ধীরে ধীরে এটি রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ ও নরসিংদীর সীমান্তবর্তী অঞ্চলের অন্যতম পশুর হাটে পরিণত হয়।
হাটটি থেকে বিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তা আসত, স্থানীয় অনেকের জীবিকা নির্ভর করত। কিন্তু হাট বন্ধের পর থেকে এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপির নেতা মোস্তফা মিয়া বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে, নির্ধারিত দিনে ও পরিকল্পিতভাবে হাটটি চালু করা হলে শিক্ষার্থীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, আর এলাকার মানুষও তাদের কর্মসংস্থান ফিরে পাবে।”
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জসিম উদ্দিন, মো. মোস্তফা মিয়া, আমজাদ হোসেন, মাসুদ মিয়া, রোকেয়া শিবলী আক্তারসহ আরও অনেকে।
Leave a Reply